• ঢাকা
  • শনিবার, ০৬ Jul ২০২৪, ১১:২৫ পূর্বাহ্ন

কটিয়াদীতে খোলা আকাশের নিচে অনাহারী বৃদ্ধার মানবেতর জীবন


প্রকাশের সময় : জুলাই ৩, ২০২৪, ১১:১৭ PM / ১৭
কটিয়াদীতে খোলা আকাশের নিচে অনাহারী বৃদ্ধার মানবেতর জীবন

রতন ঘোষ, কটিয়াদী প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসুয়া ইউনিয়নের প্রয়াত শ্রমিক লীগ নেতা বাতেন ফকিরের স্ত্রীগুলেছা বানুর(৭৫)দিন রাত কাটে খোলা আকাশের নিচে। ৪/৫দিন যাবত গাছের নিচে অনাহারে পড়ে আছেন। রাতে বৃষ্টি শুরু হলে বাজারের নৈশ প্রহরিরা তাকে তুলে এনে একটি দোকানের বারান্দায় রেখে যান । তার খাবার দাবার বলতে কিছুই নেই, কেউবা একটু মুড়ি দিয়েছেন যা ক্ষুধায় কাতর হয়ে একটু খেয়ে বাকিটুকু সামনেই রেখে দিয়েছেন।আর ক্ষীণ কন্ঠে বলছেন, বাবাগো আমারে বাঁচাও, ছেলেডা আমারে রাইখা কই গেল? পাঁচ দিন পইড়া রইছি কোন খাওন নাই, আমারে তোমরা বাঁচাও।
জানা যায় গুলেছা বানুর স্বামী পাঁচ বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছিলেন ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। নিজের কোন জমি -জমা নেই। প্রায় ত্রিশ বছর যাবত ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তার পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ ভবনে বাস করে আসছেন গুলেছা বানু। স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে সেখানেই থাকতেন। ছেলে কোন কাজকর্ম করে না, হাত পেতে যা পেতো তা নিজেও খেত আর মাকেও দিত। কিন্তু গত ২৭ জুন বৃহস্পতিবার ছেলে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। তবে যাওয়ার আগে মাকে রাস্তার পাশে গাছের নিচে রেখে যায়। চলতে-ফিরতে অক্ষম গুলেছা বানু সেখানেই পড়েছিল। রাতে বৃষ্টি শুরু হলে বাজারের নৈশ প্রহরীরা তাকে তুলে এনে একটি দোকানের বারান্দায় রেখে যায়। সেখান থেকে ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায় নিয়ে তাকে রাখা হয়। গুলেছা বানুর বড় ভাই ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বামী বাতেন ফকির ছিলেন আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। কিন্তু সহায় সম্পদ বলতে কিছুই ছিল না। গুলেছা বানুর পিতার বাড়ি ও মসূয়া ইউনিয়নের বৈরাগীরচর গ্রামে। গুলেছা বানু বলেন একমাত্র ছেলে হোসেন মিয়া ভবঘুরে হলেও রাতে ঘরে ফিরত। মাঝে মাঝে অত্যাচার উৎপিড়ন করতো এবং রাগ করে বলতো মরি না কেন? তার কথা শুনে আমার রাগ হত। কিন্তু ছেলে নিরুদ্দেশ হওয়ায় এখন অনাহারে দিন কাটে।
মসূয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বেতাল গ্রামের মেম্বার হাদিউল ইসলাম দুলাল বলেন, গুলেছা বানুকে ইউনিয়ন পরিষদের বারান্দায় নিয়ে রাখা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে বিভিন্ন রকম সাহায্য ও সহযোগিতা দেওয়া হয়। ইউপি চেয়ারম্যান আবুবক্কার বলেন, আমি নিজেও অসুস্থ। গুলেছা বানুর কোন খোঁজ খবর নিতে পারিনি। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানাবো। এ ব্যাপারে কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, “বিষয়টি আমি শুনেছি এবং খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব “।